বাউফলে কুপিয়ে দুইজনকে হত্যা

বাউফলে কুপিয়ে দুইজনকে হত্যা

 দেলোয়ার হোসেন : পটুয়াখালীর বাউফলে রুমান তালুকদার (৩১) ও ইশাত তালুকদার (২৫) দুই ভাইকে এলোপাতাড়ি ভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করেছে দুবৃর্ত্তরা। গত রবিবার ( ২আগষ্ট) সন্ধ্যায় সারে ৭টার দিকে উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়নের কেশবপুর বাজারে এ ঘটনাটি ঘটেছে। নিহত রুমান তাং ও ইশাত তাং ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা বলে জানা যায়। নিহতের স্বজনরা এ হামলার জন্য বাউফল থানার ওসির দায়িত্বহীনতাকে দায়ি করেছেন।
জানা গেছে কেশবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কেশবপুর কলেজের অধ্যক্ষ সালেহ উদ্দিন পিকু এবং সাধারণ সম্পাদক ও ওই ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন লাভলুর মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। ঘটনার দিন সন্ধ্যা সারে ৭টার দিকে সালেহ উদ্দিন পিকুর ছোট ভাই ওই ইউপির যুবলীগের সহ-সভাপতি রুমান তালুকদার ও তার চাচাতো ভাই যুবলীগ কর্মী ইসাত তালুকদার কেশবপুর বাজারে নবী আলীর দোকানে বসে চা পান করছিল। এসময় মহিউদ্দিন লাভলুর সমর্থক রফিক, রাসেল, ইব্রাহিম, নুরু নেতৃত্বে ১৫-২০ জন লোক তাদের উপর হামলা করে এবং এলোপাতাড়ি ভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে। এপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে রাত সারে ৮টার দিকে বাউফল হাসপাতালে নিয়ে আসলে জরুরী বিভাগের চিকিৎসক তাদের মৃত বলে ঘোষনা করেন।
এ ঘটনার আগে গত শুক্রবার (৩১ জুলাই) দুপুরে এই দুই পক্ষের মধ্যে দুই দফা সংঘর্ষ হয়। এতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সালেহ উদ্দিন পিকুর এক ভাইসহ উভয় পক্ষের ৪ জন আহত হন। এ ঘটনায়  শনিবার সালেহ উদ্দিন পিকুর স্বজনরা থানায় মামলা করতে গেলে বাউফল থানার ওসি মামলা গ্রহণ করেননি।
সালেহ উদ্দিন পিকুর ছোট বোন অনি সাংবাদিকদের কাছে বলেন, কেশবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন লাভলুর নির্দেশেই আমার দুই ভাইকে পরিকল্পিত ভাবে খুন করা হয়েছে। এর আগের ঘটনায় বাউফল থানার ওসি মামলা নিলে আজকে এ জোড়া খুনের ঘটনা ঘটতো না। মামলা না নিয়ে ওসি দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, এমপি আসম ফিরোজ সমর্থীত  কেশবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক ও ওই ইউপির চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন লাভলু সাথে দীর্ঘ দিন ধরে দলীয় আভ্যন্তরীণ বিরোধ চলে আসছিল। একাধিকবার উভয় পক্ষের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। কিন্তু এ বিরোধ নিষ্পত্তি করতে দলের উপজেলা পর্যায়ে কোন নেতা হস্তক্ষেপ করেননি। ফলে এই বিরোধ চলমান ছিল। ওই বিরোধের সূত্র ধরেই এই জোড়া খুন সংঘটিত হয়েছে।
এ ঘটনায় ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে ৯ জনকে আটক করেছে। আটককৃতরা হল জিয়াদ হাসান(১৭),নাইম (১৮), রাশেদ(১৮), নুরুল ইসলাম (৩৮),রাসেল(৩২),কাওসার(১৮),সাব্বির(১৫),আবুতাহের(৫০)ওসায়েম(১৪)।
এ ব্যাপারে থানা ওসি তদন্ত আল-মামুন বলেন, লাশ ময়না তদন্তের জন্য আজ সোমবার সকালে পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোট পাঠানো পর্যন্ত কোন থানায় কোন মামলা হয়নি ।
আজই বাদ আছর কেশবপুর কলেজ মাঠে জানাজা শেষে তাাদের পারিবারিক কবর স্থানে দাফন করা হবে ।
জানাজায় সাবেক চীফ হুইপ ও সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটির সভাপতি আ.স.ম ফিরোজ,এমপি উপস্থিত থাকবেন ।